বুধবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২১, ১০:৪১ পূর্বাহ্ন
এজাজ উদ্দিন চৌধুরী, মঠবাড়িয়া, পিরোজপুর:
জামিনে এসে ভূক্তভোগীকে হুমকি দিচ্ছে ধর্ষণ মামলার আসামিরা। মামলা তুলে না নিলে দুনিয়া থেকে বিদায় করে দেবে এমন হুমকির পর আতঙ্কে রয়েছেন পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার দাউদখালী ইউনিয়নের ধর্ষিতা গৃহবধূ। ধর্ষণের শিকার হয়ে মামলা করার পরেও অব্যাহত হুমকির পর তিনি কোন ধরনের আইনি আশ্রয় নিবেন তাও বুঝতে পারছেন না। এমন অভিযোগ করেন ধর্ষণের শিকার হওয়া ওই ভূক্তভোগী। ভূক্তভোগী গৃহবধূ দু’ সন্তানের জননী। তার সাথে আলাপ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, তার স্বামী বিকলাঙ্গ। বিত্তবানদের দয়ায় চলে তার সংসার। কাচা ঘরে স্বামী-সন্তান নিয়ে বসবাস করেন তিনি। এলাকার দুই চরিত্রহীন লম্পটের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে তার ওপর। এদের একজন স্থানীয় মরহুম আক্তার গাজীর পুত্র এবং দাউদখালী নূরজাহান মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি সালাম গাজী। অপরজন মান্নান কাজীর পুত্র দাউদখালী (ডিগ্রী) ফাজিল মাদরাসার নাইটগার্ড সাইফুদ্দিন কাজী। তারা উভয়ই ওই গৃহবধূকে দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। এ প্রস্তাবে কখনোই সায় ছিলোনা গৃহবধূর। এতে ক্ষিপ্ত হয় লম্পট চক্র। এরই প্রেক্ষিতে গত ২৭ মে রাতে ভূক্তভোগীর ঘরে কৌশলে প্রবেশ করে সালাম গাজী আর সাইফুদ্দিন কাজী। এরপর প্রতিবন্ধী স্বামী ও দুই শিশুকে জিম্মি করে। গৃহবধূকে তুলে নিয়ে যায় পাশের বারান্দায়। সেখানে সালাম গাজী মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে গৃহবধূকে। আর পাহারায় থাকে সাইফুদ্দিন কাজী। বিষয়টি তখন স্থানীয় গণ্যমাণ্য ব্যক্তি থেকে শুরু করে থানা পর্যন্ত গড়ায়। ভূক্তভোগী জানান, স্থানীয় চেয়ারম্যানের ইশারায় বিষয়টি চাপা পড়ে তখন। পরে আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে ধর্ষকরা। এরই মধ্যে গত ১ জুন ওই লম্পটরা একইভাবে আবারো কৌশলে ভূক্তভোগীর ঘরে প্রবেশ করে। তারা গৃহবধূর মুখ চেপে ধরে বারান্দায় নিয়ে ধর্ষণ করে। গত ৭ জুন ওই নির্যাতিতা গৃহবধূ বাদী হয়ে মঠবাড়িয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর থেকে অভিযুক্ত আসামিরা মামলার বাদী এবং তার পরিবারকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছিল। অব্যাহত হুমকির পরেও মামলা তুলে না নেয়ায় গত ২২ জুন গভীর রাতে ভূক্তভোগির বসত ঘরের পাশে রান্নাঘরে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটে। আসামিরা বাড়িতে অবস্থান করলেও পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেনি রহস্যজনক কারনে। এরই মধ্যে নতুন বাজার সংলগ্ন এলাকা থেকে অভিযুক্ত ধর্ষক সালাম গাজী (৪৫) ও মো. সাইফুদ্দিন কাজী (৩১) কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় বরিশাল র্যাব-৮ এর একটি চৌকষ দল। কিছুদিন জেল হাজত খেটে জামিনে মুক্ত হয় তারা। জামিনে এসেই মামলা তুলে নিতে বাদীকে অব্যাহত হুমকি দি”েচ্ছ। আলাপকালে গৃহবধু ধর্ষনের ঘটনায় বর্তমান আইনে বিচার দাবি ধর্ষকদের ফের গ্রেফতার ফাঁসি দাবি করেন। তিনি বলেন, গরীব মানুষ হওয়ায় তার পক্ষে কেউ নেই। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে বার বার ধর্ণা দিয়েও সুবিচার পাননি। বরং চেয়ারম্যান নিজের অবস্থান শক্ত করতে আসামিদের পক্ষালম্বন করছে।